কুরবানী ঈদ: আত্মত্যাগের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন

কুরবানী ঈদ: আত্মত্যাগের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন

اِنَّ صَلَاتِیۡ وَ نُسُکِیۡ وَ مَحۡیَایَ وَ مَمَاتِیۡ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ.
Indeed, my prayer, my sacrifice, my living and my dying are for Allah , Lord of the worlds.
لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَٰكِن يَنَالُهُ التَّقْوَىٰ مِنكُمْ
Their meat will not reach Allah, nor will their blood, but what reaches Him is piety from you.

“যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি চাও, তোমার প্রিয় জিনিসটিকেই ত্যাগ কর।”

প্রতি বছর ঘুরে ঈদুল আজহা আসে আমাদের জীবনে এক মহান বার্তা নিয়ে — যা আত্মত্যাগের, আনুগত্যের।

ঈদুল আজহা (عيد الأضحى) একটি নাম, একটি দিন, একটি উপলক্ষ, যা কেবল শুধু মাত্র উৎসবের আনন্দ নয়; বরং তা এক চিরন্তন আত্মত্যাগের, আনুগত্যের প্রতীক। এই দিনটি সারা বিশ্বে মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহান বার্তা বয়ে আনে—আত্মনিয়োগ, ঈমান, ও ত্যাগের। কুরবানীর প্রকৃত অর্থ শুধু মাত্র পশু জবাই নয়, বরং নিজের ভেতরের কুপ্রবৃত্তিকে, হিংস্র পশুকে জবাই করে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার মনোভাব অর্জন করা।

এই ঈদের পেছনে যে গল্প, তা শুধুই একটি ঐতিহাসিক, কাল্পনিক কাহিনী নয়, তা এক জীবন্ত আদর্শ, যা যুগে যুগে মুমিনের অন্তরে আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছে। ঈদুল আজহার পেছনে যে ইতিহাস আমাদের সামনে বিদ্যমান, তা কেবল এক পিতা ও পুত্রের সাধারণ ঘটনা নয়—এটি এক চিরন্তন ঈমানী বিজয়ের উপাখ্যান। যা আমাদের ঈমান কে শক্ত করে। হজরত ইব্রাহিম (আঃ) যখন স্বপ্নে আল্লাহর আদেশ পান তিনি অণুমাত্র আল্লাহর আদেশ সন্দেহ বোধ করেননি।

এই আত্মত্যাগ শুধু ইতিহাস নয়—এ এক কঠিন বার্তা:
➡ আল্লাহর পথে তুমি ত্যাগ করতে প্রস্তুত কি?
➡ তুমি নিজের নফস, অহংকার, স্বার্থপরতা, হিংসা, কুপ্রবৃত্তি—এসব ‘অন্তরের হিংস্র পশু’ জবাই করতে?
➡ তুমি কি পারবে ঈমানের জন্য দুনিয়ার আরাম-আয়েশ বিলিয়ে দিতে?

বর্তমান আধুনিক সমাজে ঈদুল আজহা এক প্রকার উৎসব, যেন পশু জবাই উৎসবে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু প্রকৃত কুরবানী কী?
আজকে যে মসজিদের ওযু খানা কোন দিকে সেটাই অনেকের জানা নেই। এমন অনেক আছে যারা জীবনে মসজিদে পা রেখেছে কি তাতেও সন্দেহ হয়। তারাই কুরবানী নিয়ে বেশি ব্যস্ত, আজকে চায়ের দোকানে কথা হয় আমার জন্তু এত টাকায় কিনেছি, বোধ বেশি নিয়ে নিয়েছে, এত টাকায় আরো ভালো জন্তু পেয়ে যেতাম এটাই চলছে কিন্তু কোরআন কি বলে:
তাদের গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে কখনো পৌঁছবে না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছাবে।
এ আয়াতটি আমাদের শেখায়—কুরবানীর আসল মূল্য কিসে। গোস্তে না অন্তরে।
আজ আমাদের ভাবতে হবে, নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে —আমরা কাকে কুরবানী করছি? পশুকে? না, নিজেকে।
নিজের লোভ, অহংকার, রাগ, হিংসা, বিদ্বেষ, গর্ব, কুপ্রবৃত্তি—এসবকে আমরা কুরবানী করছি কিনা?

আজ ঈদের দিনে আমরা নতুন জামা কাপড় পরে ছবি তুলি, সেলফি নেই, উৎসব করি—তাতে কোনো দোষ নেই। দোষ সেখানে যদি আপনি নাচের মঞ্চের সামনে গিয়ে সেলফি নেন। পশু কুরবানী হলেও যদি অন্তরের হিংস্র পশু জীবিত থাকে, তবে ঈদ পূর্ণ হয় না। ঈদ অপূর্ণ থেকে

আজ যখন আমরা কুরবানী করি, আমাদের অন্তরে এই চিন্তা অবশ্যই থাকা উচিত যে আমি আমার সমস্ত , রাগ, হিংসা, দম্ভ, অহংকার—সব কিছু কুরবানী করে দিচ্ছি তোমার পথে।”

অতএব,

👉 আমাদের কুরবানী হোক অন্তরের আত্মসমর্পণ।
👉 কুরবানী হোক এক নবযাত্রার শুরু— যা দিয়ে আপনি প্রমাণ করতে পারেন আপনি আল্লাহকে সব থেকে বেশি ভালোবাসেন , আল্লাহর জন্য আল্লাহর পথে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে পারেন।
👉 কুরবানী হোক একটি নতুন শিক্ষা

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *