হায়রে, আজ মানবতা কোথায় ?

আজ মানুষ ধর্ম, জাতী, আধিপাত্যর নামে কতই না কিছু করে থাকে ভেদাভেদ, হানাহানি, মারামরি হিংসা এমনকি  হত্যা ও করে থাকে। আজ পৃথিবীর বহুসংখ্যক মানব এই রোগের শিকার হইতেছে। সব থেকে দুংখজনক কথা হলো উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত লোক এবং ধর্মগুরুরাও এই রোগের শিকার হয়েছে অথবা হইতেছে। যারা জানে না  ধর্ম ও জাতীর প্রকৃত আর্থ কী এবং ধর্ম মানুষের কাছে কী দাবি করে? এবং এটাও জনে না যে মানবতা ছাড়া ধর্মের কুনো অস্তিত্ব নেই। পৃথিবীর প্রতিটি ধর্ম মানবতার শিক্ষা দেয় এবং এটাতে কারো কুনো সন্দেহ নেই,আমার জ্ঞাত অনুযায়ী পৃথিবীতে এমন কুন ধর্ম নেই যে অমানবিকতা, ভেদাভেদ, হানাহানির শিক্ষা দেয়। ধর্ম হলো এমন একটি নীতি ও আদর্শ যে  মানুষ ও  মনুষত্বের কথা বলে, মানবতার কথা বলে, মহানুভবের কথা বলে, সহিষ্ণুতার কথা বলে। ধর্ম কখনই হিংসা বিদ্বেষের কথা বলে না, মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটির কথা কখনো বলে না। সব ধর্মেই উদারতার কথা বলে,শান্তির কথা বলে। যেখানে শান্তির প্রজাপতি উড়ে নাই সেখানে ধর্ম নাই। যারা সবসময় মানুষের মধ্যে লড়াই করিয়ে থাকে এবং ধর্ম ও জাতি নামের রাজনীতি করিয়ে বেড়ায় আর  হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গা করায় তারা নিজেই জানে না তাদের ধর্মে কী? তাই সকল ধর্ম পন্ডিতগণের জানিয়ে রাখা উচিত যে, ধর্ম প্রতিষ্ঠা হইয়াছে মানুষের কল্যানের জন্য, ধর্মের কল্যানের জন্য মানুষ হই নাই। তাই ধর্ম সর্বদা মানুষের কল্যান করিতে থাকিবে, মানুষের অকল্যাণ করিতে নয়, জীবন নিতে নয়। যাহারা ধর্মের নামে মানুষের জীবন নিতে উদগ্রীব তাহারা মুর্খ, গোড়া কিংবা মুখস্ত বিদ্বার অধিকারী। তাহাদের মাঝে বিনয়িতা নাই, নম্রতা নাই, ভদ্রতা নেই, আছে শুধু উগ্রতা। আর এই উগ্রতায় আজকের বিশ্বে ধর্মীয় ডামাডোলের মূল কারণ। আমদের  একবার চিন্তা  করার প্রয়োজন যে সত্যিই কি আমরা মানুষ? নিজেদের মানুষ ভাবতে আজ বড় কষ্ট হয়। যার মধ্যে মনুষ্যত্ব ও মানবতা থাকে সেইতো মানুষ। মনুষ্যত্বহীনও মানবতাহীন  সমাজ পশু ও নিকৃষ্ট জীব থেকেও আরো নিকৃষ্ট । প্রতিটি জিনিসের নিজস্ব একটি ধর্ম বা গুণ থাকে, যা তার অস্তিত্বকে নির্দেশ করে। যেমন- আগুনের ধর্ম হল  পোড়ানো পানির ধর্ম  হল ভেজানো কিনতু  আগুন ও পানি যদি পোড়ানো ও ভেজানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাহলে তাদেরকে কি আর আগুন বা পানি বল যেতে পারে ? কখনোই নয়। ঠিক তেমনি মানুষের ধর্ম হচ্ছে মানবতা, অর্থাৎ দয়া, মায়া,ভালোবাসা প্রভৃতি। মানুষ যখন তার এই ধর্ম হারাবে তখন সে আর যাই হোক মানুষ হতে পারে না।একটা ক্ষুধার্ত পশুও l যদি আমাদের দড়জায় আসে তাকে আমরা অন্তত উচ্ছিষ্ট খেতে দেই। অথচ আমাদেরই মতো কিছু মানুষ আজ অথৈ সাগরে ভাসছে। আমরা তাদেরকে ন্যূনতম কুকুরের অধিকারটুকুও দিচ্ছি না। এরা যদি মানুষ না হয়ে অন্য কোনো প্রাণী হতো, তাহলেও হয়ত তাদের আশ্রয় দেয়া হতো। মানুষ হয়ে জন্মানোই যেন তাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা জাতিয়তার ভিত্তিতে অন্য দেশের,  এটাই কি আমাদের মানবতা? আমরা তো নিজেদের মানুষ বলার সমস্ত গুণ হারিয়ে ফেলেছি।আজ নাজিব ও রহিত আর না জানে  কত সন্তানের মা দিবা রাত্রি অশ্রুবিঁদু ফেলে থাকে। তারা তাদের সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করার জন্য ভারতের বিখ্যাত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায় কত আশা নিয়ে কিন্ত আফসোস জাতি, ধর্ম, নীচু জাতের নামে তাদের সঙ্গে বৈষম্যসূচক আচরণ করা হয়। আজ মানবতাকে ধর্মের নামে বিভক্ত করা হয়,যদি আসিফা ধর্ষিতা হয় তাহলে মানবতারা কুনো প্রশ্নই উঠে না আর যদি পিংকি ধর্ষিতা হয় তাহলে মানবতার প্রশ্ন উঠে যায়, আর এই সমস্ত করছে সমাজের কিছু নেতা ও ভন্ড ধর্ম গুরুরা। শিশুরা নিষ্পাপ, ফুলের মতো পবিত্র। কোনো শিশু আমাদের চোখের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলেই আমরা আবেগে আপ্লুত হই। যখন দেখি শিশুরা রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে, তখন আমাদের কথা বলার ভাষা থাকে না।আজ আসিফার মতো কতো শিশু ও মেয়ে  নির্যাতিত হইতেছে। চিন আজ মানবতাহীনতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক শান্তিবাদী সংস্থাগুলো বিবৃতি দিচ্ছে, যুদ্ধবিরতি চাইছে আর অন্যদিকে মানুষের রক্তাক্ত দেহের স্তূপ বাড়ছে বিশ্ব এভাবে চলতে পারে না। শিশুদের এমন অবস্থা দেখে আমরা মুসলিম ও প্রিয় মানবতাবাদী হিন্দুরা  অভ্যস্ত নই।আর আমি আগেই বলেছি যে  এই সবের মূল হলো ধর্মান্ধ নরপশুগুলা। যারা দিনে দুপুড়ে মানুষ হত্যা করে তাদের কি মানুষ বলে ডাকবেন ? বর্তমানে ভারতে অবস্থা বিবেচনা করেন দিনে দুপুড়ে চাপাতির কুপে মানুষ হত্যা করা হয়। পেট্রোল বোমা দিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে দেয়। আমরা আধুনিক যুগে বাস করেও যদি মধ্যে যুগের মত বর্বরতা, এবং মিথ্যাদৃষ্টিতে পরে থাকি তাহলে দেশ এবং দেশের মানুষ উন্নত হবে কোথা হতে? একটা দেশ উন্নত হতে হলে দরকার দেশের মানুষের শিক্ষা । আর মানুষ যদি শিক্ষিত না হয়,তাহলে দেশ উন্নত হবে কোথা হতে ?উন্নত তো বাদ দিলাম দিনকে দিন ধংস হচ্ছে। আজকাল মানুষ এ চিন্তা করে বের হয় যে বার হচ্ছি বাসা হতে, কিন্তু ফিরে আসতে পারব কিনা জানি না। ভাই সকল দোয়া করবেন, যাতে সুস্থ সুন্দর দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে পারি। আজ আমরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করছি আর অন্য দেশগুলো আকাশ স্পর্শ করিতেছে। আধুনিক যুগে এসেও ভারতের শিক্ষিত সমাজ যদি ধর্ম জাতীরা নামে লড়াই করে তাহলে নতুন প্রজন্মরা, তারা কি শিক্ষা নিবে ? দেশতো আর দেশ থাকে না রে ভাই জঙ্গিদেশে রূপান্তরিত হবে তখন আপনি আমি কেউ নিরাপধ থাকবোনা ।আজ কেনো আমরা এতো নীরব, আমদের মনে একটূ দয়া হয় এই  সমস্ত দেখেও শুনে। জেনে রাখুন সৃষ্টির সেরা মানুষ যখন প্রভুকে ভুলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠে, নীতি নৈতিকতা ভুলে যায়,

রাজনৈতিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক শোষণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে লিপ্ত হয়- তখনই শান্তি বিনষ্ট হয়। আসলে সামাজিক ভেদাভেদ, পেশী শক্তির মহড়া থেকে মুক্তি পেতে হলে মানুষের মাঝে পরস্পরে হিংসা-মারামারি ও শত্রুতার দেয়াল ভাঙতে হবে। তাই বাস্তব জগতে আমাদের এই নীরবতা, উদাসীনতা আমাদের নিজেদের জীবনকেই করে তুলবে একসময় বিপন্ন। এই নীরবতায় ফায়দা লুটছে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণী। এই সুবিধাভোগী শ্রেণীকে এভাবে চলতে দিতে থাকলে একদিন সমাজ হবে বিপন্ন।তাই বলছি ওঠো জেগে ওঠো মাথা উঁচু করে, বিশ্ব জুড়ে দাঁড়াও এবার চেয়ে দেখো, তোমার বুকে কতো, অন্যায় অবিচার জুলুম ত্রাসের আর্তনাদ

বন্ধ করো, বন্ধ করো এসব থেকোনা চেয়ে আর নির্বিকার।

                           Haydoruddin

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *