প্রকৃতির উদারতা আর পৃথিবীর বিশালতা দেখে অনুমিত হই! জীবনের রক্তিম আভা প্রজ্জ্বলিত আছে তো?? কণ্টকময় মাগ আর শোণিত সাগর পাড়ি দিয়ে লক্ষ্য পানে পৌঁছাতে সক্ষম হবো তো?? কোথাও যেন প্রশ্ন চিহ্ন থেকে যায়! তমিশ্র ধরণীর বুকে নিজেকে জানুন?(know the self).
আয়ুর কক্ষপথ কোথায় গিয়ে অবস্থান করে না জানায় থেকে যায়! চিন্তার জগৎ বেছে নিতে যারা উৎসাহিত, কেবল তারা পরাস্ত নয় কোনক্রমে! সূর্যোদয় হওয়া থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে চিন্তার উন্মেষ প্রতিফলিত করতে হবে। নৈতিকতার আঁধার হয়ে সমাজের বুকে আলো সম্প্রসারিত করতে হবে। এ কাজ আমার আপনার সকলের!
আর এটাই ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য !
🔺মানুষ সৃষ্টির রহস্য!
পৃথিবীতে হাজারো মাখলুকাতের চেয়ে সর্বোৎকৃষ্ট মানুষ। যেমন ভাবে আল্লাহ বলেন:অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে। (সূরা আত-ত্বিন)
(He said: “Surely We created man in the best of forms.”)
অন্যত্রে বলেন: مَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَ الۡاِنۡسَ اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡنِ
আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদাত করবে। (সূরা-যারিয়াত)
(And I create the jinn and mankind except to worship Me.)
কেবলমাত্র ইবাদত অর্থাৎ অনুগত্য করার জন্যই মূলত পৃথিবীতে প্রেরণ করেছে মানুষ তথা জ্বীনকে। রুহের জগতে সকলেই স্বীকারোক্তি দিয়েছিলাম অনুগত্যের! কিন্তু পৃথিবীর বুকে সময়ের আবর্তে স্বীকারোক্তি ভূল গিয়ে শয়তানের শিকলবন্দী হয়েছে!: يَا أَيُّهَا الْإِنْسَانُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِۙ
হে মানুষ! কিসে তোমাকে তোমার মহান রবের সম্পর্কে ধোঁকা দিয়েছে? (সূরা ইনফিতর)।
🔺সবল ও দূর্বল মুমিনের পার্থক্য:
মুমীন শব্দের আক্ষরিক অর্থ বিশ্বাসী (beliver).যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে প্রতি নিঃশ্বাসে,এবং বিশ্বাসের উপর অটল থেকে কঠিনতম পরিস্থিতিতেও ইসলাম থেকে বিমুখ হয় না।
ঈমানের স্বীকারোক্তি দেওয়ার কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলি নিম্নরূপ:
🟢আমানতু বিল্লাহি, ওয়া মালায়িকাতিহি, ওয়া কুতুবিহি, ওয়া রাসুলিহি, ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি, ওয়াল কদরি খয়রিহি ওয়া শাররিহি মিনাল্লাহি তাআলা, ওয়াল বাআছি বাদাল মাউত।’
অর্থাৎ: ১)আমি বিশ্বাস আনলাম আল্লাহর প্রতি,
২) তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি,
৩)তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি,
৪)তাঁর রাসুলগণের প্রতি,
৫)কিয়ামতের দিনের প্রতি;
৬) তাকদিরের প্রতি, ভাগ্যের ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে; মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের প্রতি।
প্রকৃত অর্থে প্রত্যেকটা বিষয়কে যথাযথ ভাবে বিশ্বাসের স্বীকারোক্তি দিতে হবে। যেমনভাবে হাদিসে এসেছে:
🟢 আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, (দেহমনে) সবল মুমিন আল্লাহর নিকট দুর্বল মুমিন অপেক্ষা বেশী প্রিয়। আর প্রত্যেকের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। তুমি ঐ জিনিসে যত্নবান হও, যাতে তোমার উপকার আছে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর ও উৎসাহহীন হয়ো না। যদি তোমার কিছু ক্ষতি হয়, তাহলে এ কথা বলো না যে, যদি আমি এ রকম করতাম, তাহলে এ রকম হত।’ বরং বলো, আল্লাহর (লিখিত) ভাগ্য এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন।’ কারণ, যদি’ (শব্দ) শয়তানের কাজের দুয়ার খুলে দেয়। [বুখারি ২৬৬৪, ইবন মাজাহ ৭৯, ৪১৬৮, আহমদ ৮৫৭৩, ৮৬১১]!
🔺উপসংহার:
প্রিয় সাথী নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার আপ্রাণ প্রয়াস চালাতে হবে। এমন যেন না হয় নাফসের অধিক চাওয়া এবং শয়তানের ছলনা মোদের স্রষ্টা বিমুখ করে দেয়!
যেমন ভাবে আল্লাহ বলেন :নিঃসন্দেহ শয়তান তোমাদের শত্রু, কাজেই তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর! সে তো তার সাঙ্গোপাঙ্গকে কেবলই আহ্বান করে যেন তারা জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দা হয়। (ফাতির-৬) অন্যত্রে বলেনঃ সেই ব্যর্থ হয়েছে যে নিজ আত্মাকে কলূষিত করেছে। সেই ব্যক্তি সফল হয়েছে যে নিজ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। (শামস ৯-১০)
And he has failed who instills it [with corruption].The one who purifies his soul is successful. একই কথা সূরা আল-আলাতেও বলা হয়েছে। সর্বোপরি প্রিয় সাথী আসুন নিজেকে আল্লাহর রঙ্গে নিজেকে রাঙিয়ে নিই।
আল্লাহ আমাদের সকলকে কবুল করুন। আমীন ইয়া রব।
লেখা আরিফ সেখ
(ব্যক্তিগত অভিমত